ডেস্ক নিউজ : ইতালি সরকার ও ইউনিয়ন অব ইসলামিক কমিটিজ অ্যান্ড অরগানাইজেশন ইন ইতালির (ইউসিওআইআই) মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে, যার অধীনে ইমামরা কারাগারের মুসলিম বন্দিদের ধর্মীয় শিক্ষা-দীক্ষা প্রদান ও নামাজের ইমামতি করার সুযোগ পাবেন। কারা প্রশাসনের প্রধান বিচারক বার্নার্ডো পেট্রেলিয়া ও ইউসিওআইআইয়ের সভাপতি ইয়াসিন লাফরাম চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।
গত মাসে শেষ সপ্তাহে দেশটির মসজিদ ও প্রার্থনাকক্ষগুলো খুলে দেওয়ার ব্যাপার ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতে ও ইউসিওআইআইয়ের প্রতিনিধি দলের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তির আলোকেই নতুন সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো। মুসলিম প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাষ্ট্রীয়ভাবে চুক্তি স্বাক্ষরের ঘটনাকে অনেকেই ইতালিতে ধর্ম হিসেবে ইসলামকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের অগ্রগতি হিসেবেই দেখছেন। চুক্তি স্বাক্ষরের পর মুসলিম সম্প্রদায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে।
ইতালির বিচার মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইতালির ৬০ হাজার বন্দির মধ্যে ১০ হাজারই বিদেশি। তাদের বেশির ভাগই মরোক্ক, তিউনিশিয়া ও রোমানিয়ার নাগরিক। ইতালির বন্দিদের মধ্যে সাত হাজার দুই শ জন মুসলিম। তাদের জন্য ৯৭ জন ধর্মীয় শিক্ষক রয়েছেন। বন্দির ৪৪ জনের দাবি তারা জেলেই ইসলাম গ্রহণ করেছে। বর্তমানে ইতালির মাত্র কয়েকটি জেলে মুসলিম বন্দিদের প্রার্থনার জায়গা রয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
ইতালির বিচার মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইতালির সংবিধানে সব নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতার নীতি রয়েছে—এই চুক্তি তা প্রয়োগে সহায়তা করবে। ইতালির সংবিধান সব বন্দির জন্য সঠিকভাবে ধর্মপালনের অধিকার দিয়েছে। ইতালির কারাগারে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সবার জন্য সঠিকভাবে ধর্মপালনের সুযোগ করে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী ইউসিওআইআই ইতালিতে ইমামের দায়িত্ব পালনকারীদের একটি তালিকা দেবে, যারা সারা দেশের কারাগারের মুসলিম বন্দিদের ধর্মীয় দিকনির্দেশনা দেবে এবং তাদের নামাজের ইমামতি করবে। কর্মক্ষেত্র নির্বাচনে ইমামদের মতামত নেওয়া হবে। ইতালীয় মুসলিমদের নেতা লাফরাম বলেন, ‘এটি খুবই স্বস্তিকর। নতুন সমঝোতা চুক্তির আলোকে ইতালির সব কারাগারে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা সম্ভব হবে। এটি মূলত পাঁচ বছর আগের একটি প্রজেক্টের সুফল, যার অধীনে ইতালির আটটি কারাগারে শুরু হয়েছিল।’
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইতালির কয়েকটি কারাগারে মুসলিম বন্দিদের নামাজের জন্য কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে একত্রে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের সুযোগ ছিল না। তবে রমজানের মতো বিশেষ সময়ে কর্তৃপক্ষ জামাতে নামাজ আদায়ের অনুমতি দেয়।
আরব নিউজ অবলম্বনে